যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পাঁচ লাখেরও বেশি অভিবাসীর আইনি মর্যাদা সাময়িকভাবে বাতিল করার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার (৩০ মে) সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এই যুগান্তকারী রায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে প্রতিষ্ঠিত ‘প্যারোল’ অভিবাসন কর্মসূচি বাতিল করার বিরুদ্ধে ফেডারেল বিচারকের দেওয়া পূর্বের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলো। এই কর্মসূচির অধীনে নিজ নিজ দেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে পালিয়ে আসা অভিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের এই নতুন আদেশের ফলে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনিজুয়েলার প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসী প্রত্যর্পণের ঝুঁকিতে পড়েছেন। এর আগে আদালতের তিনজন উদারপন্থি বিচারকের মধ্যে দুজন- বিচারক কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসন এবং সোনিয়া সোতোমায়োর – এই রায়ের বিরোধিতা করে ভিন্নমত দিয়েছেন।
মার্কিন সরকারের মতে, প্যারোল কর্মসূচি ‘জরুরি মানবিক কারণ বা উল্লেখযোগ্য জনস্বার্থের’ ভিত্তিতে অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে কাজ ও বসবাসের সুযোগ দেয়।
ম্যাসাচুসেটসের একজন ফেডারেল বিচারক মানবিক প্যারোল নামে পরিচিত এই কর্মসূচি বাতিল করা থেকে প্রশাসনকে বিরত রাখার আদেশ দেওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে একটি জরুরি আপিল দায়ের করেছিল।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, হোয়াইট হাউস পাঁচ লাখ ‘অনুপ্রবেশকারীর’ প্রত্যর্পণের সুযোগকে ‘উদযাপন’ করছে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট ন্যায়সঙ্গতভাবে হস্তক্ষেপ করেছে।’
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার দিনই একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন, যার মাধ্যমে ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে প্যারোল কর্মসূচিগুলো বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গত মার্চ মাসে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম আনুষ্ঠানিকভাবে মানবিক প্যারোল কর্মসূচির অবসানের ঘোষণা দেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিবাসী অধিকার গোষ্ঠী মামলা দায়ের করেছিল।
এই মাসের শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প প্রশাসনকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার ভেনিজুয়েলান অভিবাসীর জন্য পৃথক একটি কর্মসূচি – টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস)- বাতিল করার অনুমতি দেওয়ার পরই এই নতুন রায় এলো, যা অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস